কেন প্রতিবন্ধী অভিনেতারা প্রতিবন্ধী চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন না? বিশ্বব্যাপী প্রতিবন্ধীদের এই দীর্ঘদিনের দাবিটি আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যখন আমরা প্যারাপ্লেজিয়ায় আক্রান্ত হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী কিজাক্কাম্বালাম, এর্নাকুলামের অঞ্জু রানি জয় (৩২)-এর সঙ্গে দেখা করি, যিনি দুটি মূলধারার মালায়ালম ছবিতে অভিনয় করেছেন।
নবজীবন ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা পি.ইউ. থমাসের ২০১৯ সালের বায়োপিক ‘ওরু নাল্লা কোট্টায়মকরণ’-এ অঞ্জু তার দত্তক মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। অঞ্জু, যিনি মেরুদণ্ডের আঘাত এবং পায়ের বিকলত্ব নিয়ে জন্মেছিলেন, বলেছেন—"শুট চলাকালীন আমাকে এতটা সাহায্য করার জন্য আমি পরিচালক সাইমন কুরুভিল্লা এবং সেটের প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞ"৷ ২০২১ সালে সিজু বিজয়ন পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘ইনশা’, হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী ১৩ বছরের ইনশার গল্প, যার স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাট্রফি বা স্পাইনাল পেশির দুর্বলতা আছে - যে সমুদ্র দেখার স্বপ্ন দেখে; ছবিতে অঞ্জু একজন আর্ট স্টুডেন্টের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
পারফরম্যান্স ট্রুপ ফ্রিডম অন হুইলস-এর একজন সদস্য হিসাবে অঞ্জু, প্যারাপ্লেজিক ওয়েলফেয়ার সোসাইটি থানালের উদ্যোগে অভিনয় করেছেন, যেটিকে সর্ব-হুইলচেয়ার-ব্যবহারকারী কাস্ট হিসেবে ভারতের প্রথম নাটক বলে দাবি করা হয়। ভি.টি. রাথীশ পরিচালিত ‘ছায়া’ আসলে বিকলত্ব নিয়ে নয়, এটি একজন চিত্রশিল্পীর জীবনের উত্থান-পতন নিয়ে হাস্যরসাত্মক একটি নাটক।
অঞ্জুর নিজস্ব কিছু কৌশল আছে! যেগুলি তিনি ফ্রিডম অন হুইলস শো, যেমন - জার-লিফটিং এবং মিরর-রাইটিং-এর সময় দেখান। তিনি বললেন, “আমি টিভিতে দুটোই দেখেছিলাম এবং মজার জন্যই এটা চেষ্টা করার কথা ভেবেছিলাম’’। তিনি তার বুড়ো আঙুল এবং তর্জনী দিয়ে দুটি ১.২৫ কেজি ওজনের জার তুলে ৭৫ সেকেন্ড ধরে রাখার বিশ্ব রেকর্ড করেছেন। তিনি একটি বোর্ডে একই সঙ্গে উভয় হাত দিয়ে লিখতে পারেন, এর বাঁ দিকের অর্ধেকটা ডানদিকের শব্দগুলিকে প্রতিফলিত করে।
ইদুক্কির পার্বত্য জেলার পোনমুডিতে বেড়ে ওঠার জন্য, "ভূমির খাড়া বাঁকের কারণে হুইলচেয়ার ব্যবহার করা অসম্ভব ছিল"। অঞ্জুর বাবা কে.জি. জয় - স্কুলের একজন শারীরিক শিক্ষার টিচার - অঞ্জুকে তার নিম্ন প্রাথমিক (এল.পি.) স্কুলে নিয়ে যেতেন। চতুর্থ শ্রেণীর পরে তাকে ইউ.পি.র একটি স্কুলে যেতে হতো যেটা হাঁটা পথে অনেক দূরে ছিল, এবং তাই ‘টিউশন শিক্ষকেরা বাড়িতে এসেছিলেন’। তিনি ডিসটেন্স এডুকেশনের মাধ্যমে সমাজবিজ্ঞানে বি.এ. করেছেন।
মাঝে মাঝে ফ্যাশন মডেল হওয়ার পাশাপাশি, অঞ্জুর একটি 'ক্র্যাফটি' দিকও আছে। তিনি পোড়ামাটি আর কাগজের মণ্ড এবং পুঁতি দিয়ে চোখ ধাঁধানো গয়না তৈরি করেন। তিনি জোর দিয়েই বলেন যে, তার বাবা-মা জয় এবং জেসি এবং তার ছোট ভাইবোন অ্যাশলে এবং অমলের অবিরাম সমর্থন ছাড়া তার কোনো কীর্তি সম্ভব হতো না।